ঢাকা ০২:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
তিন দলই প্রধান উপদেষ্টার অধীনে নির্বাচন চায়: প্রেস সচিব টিউলিপ বাংলাদেশি এনআইডি ও পাসপোর্টধারী, রয়েছে টিআইএনও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক নববর্ষের অঙ্গীকার: প্রধান উপদেষ্টা নরেন্দ্র মোদিকে উপহার দেওয়া ছবিটি সম্পর্কে যা জানা গেল বিমসটেকের পরবর্তী চেয়ারম্যান ড. ইউনূস বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে মোদির ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রেসসচিব চীন সফরে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্যে ভারতে তোলপাড় ড. ইউনূসকে ঈদগাহের মুসল্লিরাঃ আপনি ৫ বছর দায়িত্বে থাকুন, এটাই দেশের মানুষের চাওয়া বাংলাদেশে বিশ্বমানের হাসপাতালের মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতে বিপ্লবের সূচনা! খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ঈদের দাওয়াত দিলেন প্রধান উপদেষ্টা যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন সেনাপ্রধান পররাষ্ট্র নীতিতে ড. ইউনূসের কাছে হেরে গেছেন নরেন্দ্র মোদী! ৩ এপ্রিলও ছুটির প্রস্তাব, মিলতে পারে ৯ দিনের ছুটি বউয়ের টিকটকেই ধরা সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ, ‘ক্লু’ ছিল গাড়িতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মঈনুদ্দিনের পরিচয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যবের পরিচয় শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে সব প্রমাণ সরকারের কাছে আছে জেলায় জেলায় সরকারি অর্থে ‘আওয়ামী পল্লি’

শেখ হাসিনা ইস্যুতে একঘরে হয়ে পড়ছে ভারত?

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৯:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 172
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে যেন বিপদেই পড়েছে ভারত। শেখ হাসিনা দিল্লির কাছে সাময়িক সময়ের জন্য আশ্রয়ের অনুমতি চাইলেও দেশটিতে তার অবস্থান দীর্ঘ হয়েছে। ভারতের নামকরা কূটনীতিকরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য তদবির করলেও, গত ১২০ দিনেও তাতে সফল হয়ে উঠতে পারেননি।

কূটনীতির শক্তি নির্ভর করে একটি দেশ সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে কতটা শক্তিশালী। যে দেশ এ দুটি দিকে শক্তিশালী সে দেশের কূটনীতিকরাও বিশ্বে ততটা প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে বা বহুপক্ষীয় ফোরামগুলোতে নিজেদের কাজ উদ্ধার করে আনতে পারেন। কূটনীতিতে বিশ্বজুড়ে ভারতের বেশ সুনাম রয়েছে। তবে শেখ হাসিনা ইস্যুতে ভারতীয় কূটনীতিকদের শক্তি ও প্রভাবের অবস্থা কোথায় নেমেছে, তা এখন ভাবনায় ফেলেছে ভারতকে।

কর্তৃত্ববাদী শাসনের কারণে শেখ হাসিনা থেকে আগেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে পশ্চিমা দুনিয়া। হাসিনাকে তার পছন্দের পশ্চিমা দেশগুলো আশ্রয় দিতে চাচ্ছে না। শেখ হাসিনাকে সুরক্ষা দেওয়া ভারতের মর্যাদার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, শেখ হাসিনা ক্ষমতার পুরোটা সময় দিল্লি থেকে সমর্থন পেয়ে এসেছেন। এখন শেখ হাসিনার বিপদে দিল্লি যদি নৈতিকতার প্রশ্নে তার হাত ছেড়ে দেয়, তবে অঞ্চলের বাকি মিত্ররা কখনোই আর ভারতের ওপর ভরসা করবে না। ফলে নৈতিকতার দিকটা ছাড় দিয়েও শেখ হাসিনাকে যেকোনো মূল্যে আগলে রাখছে দেশটি।

এমন পরিস্থিতিতে ভারত-যুক্তরাষ্ট-চীন ত্রিপাক্ষিক সম্পর্কে কি প্রভাব ফেলে সেটাই দেখার বিষয়। হেনরি কিসিঞ্জার একবার বলেছিলেন, ‘আমেরিকার শত্রু হওয়া বিপজ্জনক হতে পারে, কিন্তু আমেরিকার বন্ধু হওয়া ভয়াবহ।’ কথাগুলো ভারতের জন্য পুরোপুরি মানানসই বলে মনে হচ্ছে।

এদিকে চীনা পণ্যের ওপর ভারত মুখে মুখে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কথা বললেও চীনের সঙ্গে তার বাণিজ্য বেড়েছে এতোদিন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বাড়তি যে বাণিজ্য তা মূলত চীন থেকে করা আমদানির ওপর নির্ভরশীল। ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য চীনের প্রয়োজন থাকলেও চীনের ভারতের ওপর এমন কোনো নির্ভরতা নেই। শেষ পর্যন্ত চার বছর পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মোদি সরকার বুঝতে পেরেছে যে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য চীনের সহযোগিতা অপরিহার্য। কিন্তু হাসিনা ইস্যুতে যদি সম্পর্ক খারাপ হয়, তবে কোন পথে হাটবে ভারত?

এদিকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ‘সীমিত’ করার জন্য ভারতের উপর চাপ দিয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু সেই চাপের মুখে ভারত নতি স্বীকার করতে রাজি হয়নি। বরং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত করে ভারত। রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ হলেও সে দেশ নিয়ে নিয়ে কিন্তু ভারতেরএক ধরনের ‘আশঙ্কা’ বা ‘ভীতি’ও রয়েছে। এর কারণ হলো চীন। ভারতের আশঙ্কা রাশিয়ার সঙ্গে চীনের নৈকট্য বাড়তে পারে।

চীনের কারণে ভারতও কিন্তু রাশিয়ার উপর পুরপুরি নির্ভরশীল হতে চায় না। ভারত মনে করে, চীনের দিক থেকে চ্যালেঞ্জ বাড়তে পারে, সে ক্ষেত্রে তাদের অন্য অংশীদার থাকা জরুরি। ভারতের বিরুদ্ধে চীনের আগ্রাসনকে রাশিয়া কতটা সমর্থন করবে সে বিষয়ে ভারত নিজেকে আশ্বস্ত করতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে হাসিনা ইস্যু নতুন করে ভাবাচ্ছে ভারতকে। সার্বিক দিক বিবেচনায় পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, বিশ্ব বাজার থেকে ভারত একঘরে হয়ে যাচ্ছে না তো?

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

শেখ হাসিনা ইস্যুতে একঘরে হয়ে পড়ছে ভারত?

আপডেট সময় : ০৬:৫৯:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

 

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে যেন বিপদেই পড়েছে ভারত। শেখ হাসিনা দিল্লির কাছে সাময়িক সময়ের জন্য আশ্রয়ের অনুমতি চাইলেও দেশটিতে তার অবস্থান দীর্ঘ হয়েছে। ভারতের নামকরা কূটনীতিকরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য তদবির করলেও, গত ১২০ দিনেও তাতে সফল হয়ে উঠতে পারেননি।

কূটনীতির শক্তি নির্ভর করে একটি দেশ সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে কতটা শক্তিশালী। যে দেশ এ দুটি দিকে শক্তিশালী সে দেশের কূটনীতিকরাও বিশ্বে ততটা প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে বা বহুপক্ষীয় ফোরামগুলোতে নিজেদের কাজ উদ্ধার করে আনতে পারেন। কূটনীতিতে বিশ্বজুড়ে ভারতের বেশ সুনাম রয়েছে। তবে শেখ হাসিনা ইস্যুতে ভারতীয় কূটনীতিকদের শক্তি ও প্রভাবের অবস্থা কোথায় নেমেছে, তা এখন ভাবনায় ফেলেছে ভারতকে।

কর্তৃত্ববাদী শাসনের কারণে শেখ হাসিনা থেকে আগেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে পশ্চিমা দুনিয়া। হাসিনাকে তার পছন্দের পশ্চিমা দেশগুলো আশ্রয় দিতে চাচ্ছে না। শেখ হাসিনাকে সুরক্ষা দেওয়া ভারতের মর্যাদার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, শেখ হাসিনা ক্ষমতার পুরোটা সময় দিল্লি থেকে সমর্থন পেয়ে এসেছেন। এখন শেখ হাসিনার বিপদে দিল্লি যদি নৈতিকতার প্রশ্নে তার হাত ছেড়ে দেয়, তবে অঞ্চলের বাকি মিত্ররা কখনোই আর ভারতের ওপর ভরসা করবে না। ফলে নৈতিকতার দিকটা ছাড় দিয়েও শেখ হাসিনাকে যেকোনো মূল্যে আগলে রাখছে দেশটি।

এমন পরিস্থিতিতে ভারত-যুক্তরাষ্ট-চীন ত্রিপাক্ষিক সম্পর্কে কি প্রভাব ফেলে সেটাই দেখার বিষয়। হেনরি কিসিঞ্জার একবার বলেছিলেন, ‘আমেরিকার শত্রু হওয়া বিপজ্জনক হতে পারে, কিন্তু আমেরিকার বন্ধু হওয়া ভয়াবহ।’ কথাগুলো ভারতের জন্য পুরোপুরি মানানসই বলে মনে হচ্ছে।

এদিকে চীনা পণ্যের ওপর ভারত মুখে মুখে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কথা বললেও চীনের সঙ্গে তার বাণিজ্য বেড়েছে এতোদিন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বাড়তি যে বাণিজ্য তা মূলত চীন থেকে করা আমদানির ওপর নির্ভরশীল। ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য চীনের প্রয়োজন থাকলেও চীনের ভারতের ওপর এমন কোনো নির্ভরতা নেই। শেষ পর্যন্ত চার বছর পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মোদি সরকার বুঝতে পেরেছে যে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য চীনের সহযোগিতা অপরিহার্য। কিন্তু হাসিনা ইস্যুতে যদি সম্পর্ক খারাপ হয়, তবে কোন পথে হাটবে ভারত?

এদিকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ‘সীমিত’ করার জন্য ভারতের উপর চাপ দিয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু সেই চাপের মুখে ভারত নতি স্বীকার করতে রাজি হয়নি। বরং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত করে ভারত। রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ হলেও সে দেশ নিয়ে নিয়ে কিন্তু ভারতেরএক ধরনের ‘আশঙ্কা’ বা ‘ভীতি’ও রয়েছে। এর কারণ হলো চীন। ভারতের আশঙ্কা রাশিয়ার সঙ্গে চীনের নৈকট্য বাড়তে পারে।

চীনের কারণে ভারতও কিন্তু রাশিয়ার উপর পুরপুরি নির্ভরশীল হতে চায় না। ভারত মনে করে, চীনের দিক থেকে চ্যালেঞ্জ বাড়তে পারে, সে ক্ষেত্রে তাদের অন্য অংশীদার থাকা জরুরি। ভারতের বিরুদ্ধে চীনের আগ্রাসনকে রাশিয়া কতটা সমর্থন করবে সে বিষয়ে ভারত নিজেকে আশ্বস্ত করতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে হাসিনা ইস্যু নতুন করে ভাবাচ্ছে ভারতকে। সার্বিক দিক বিবেচনায় পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, বিশ্ব বাজার থেকে ভারত একঘরে হয়ে যাচ্ছে না তো?