ঢাকা ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
কিভাবে বাড়ছে বাংলাদেশের আয়তন? পাল্টে যাচ্ছে পুলিশ, র‌্যাব, আনসারের পোশাক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পদত্যাগ করছেন পুতুল? চারটি প্রদেশ নিয়ে গঠিত হবে নতুন বাংলাদেশ! সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার সিদ্ধান্ত যৌক্তিক : প্রেসসচিব অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন: সাংবাদিকদের নামে মামলা নতুন অডিও ফাঁস : কাঁদতে কাঁদতে যা বললেন শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব শেখ হাসিনার বিচার করা: শফিকুল আলম পুতুলকে ডব্লিউএইচও থেকে অপসারণে অনলাইনে স্বাক্ষর জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে জনসাধারণের অভিমত চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শাপলা চত্বরে হেফাজত দমন : অপারেশন ফ্ল্যাশ আউট বেগম জিয়াকে হিংসা করতেন হাসিনা ভারতের নাগরিকত্ব নিয়েছেন শেখ হাসিনা? পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাত্রদের ঘোষণাপত্র দিতে বারণের কারণ জানালেন ড. ইউনূস  ঐক্যবদ্ধভাবে দিতে না পারলে জুলাই ঘোষণাপত্রের দরকারই নাই রেস্তোরাঁ, ওষুধ ও মোবাইল রিচার্জে বাড়ছে না ভ্যাট ধর্মনিরপেক্ষতাসহ রাষ্ট্র পরিচালনার ৩ মূলনীতি বাদ পদত্যাগপত্রে যা বললেন টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক আমার মেয়ের খুনি কে, আমি কি বিচার পাব না: প্রশ্ন তিন্নির বাবার

শেখ হাসিনা ইস্যুতে একঘরে হয়ে পড়ছে ভারত?

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৯:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 136
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে যেন বিপদেই পড়েছে ভারত। শেখ হাসিনা দিল্লির কাছে সাময়িক সময়ের জন্য আশ্রয়ের অনুমতি চাইলেও দেশটিতে তার অবস্থান দীর্ঘ হয়েছে। ভারতের নামকরা কূটনীতিকরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য তদবির করলেও, গত ১২০ দিনেও তাতে সফল হয়ে উঠতে পারেননি।

কূটনীতির শক্তি নির্ভর করে একটি দেশ সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে কতটা শক্তিশালী। যে দেশ এ দুটি দিকে শক্তিশালী সে দেশের কূটনীতিকরাও বিশ্বে ততটা প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে বা বহুপক্ষীয় ফোরামগুলোতে নিজেদের কাজ উদ্ধার করে আনতে পারেন। কূটনীতিতে বিশ্বজুড়ে ভারতের বেশ সুনাম রয়েছে। তবে শেখ হাসিনা ইস্যুতে ভারতীয় কূটনীতিকদের শক্তি ও প্রভাবের অবস্থা কোথায় নেমেছে, তা এখন ভাবনায় ফেলেছে ভারতকে।

কর্তৃত্ববাদী শাসনের কারণে শেখ হাসিনা থেকে আগেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে পশ্চিমা দুনিয়া। হাসিনাকে তার পছন্দের পশ্চিমা দেশগুলো আশ্রয় দিতে চাচ্ছে না। শেখ হাসিনাকে সুরক্ষা দেওয়া ভারতের মর্যাদার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, শেখ হাসিনা ক্ষমতার পুরোটা সময় দিল্লি থেকে সমর্থন পেয়ে এসেছেন। এখন শেখ হাসিনার বিপদে দিল্লি যদি নৈতিকতার প্রশ্নে তার হাত ছেড়ে দেয়, তবে অঞ্চলের বাকি মিত্ররা কখনোই আর ভারতের ওপর ভরসা করবে না। ফলে নৈতিকতার দিকটা ছাড় দিয়েও শেখ হাসিনাকে যেকোনো মূল্যে আগলে রাখছে দেশটি।

এমন পরিস্থিতিতে ভারত-যুক্তরাষ্ট-চীন ত্রিপাক্ষিক সম্পর্কে কি প্রভাব ফেলে সেটাই দেখার বিষয়। হেনরি কিসিঞ্জার একবার বলেছিলেন, ‘আমেরিকার শত্রু হওয়া বিপজ্জনক হতে পারে, কিন্তু আমেরিকার বন্ধু হওয়া ভয়াবহ।’ কথাগুলো ভারতের জন্য পুরোপুরি মানানসই বলে মনে হচ্ছে।

এদিকে চীনা পণ্যের ওপর ভারত মুখে মুখে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কথা বললেও চীনের সঙ্গে তার বাণিজ্য বেড়েছে এতোদিন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বাড়তি যে বাণিজ্য তা মূলত চীন থেকে করা আমদানির ওপর নির্ভরশীল। ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য চীনের প্রয়োজন থাকলেও চীনের ভারতের ওপর এমন কোনো নির্ভরতা নেই। শেষ পর্যন্ত চার বছর পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মোদি সরকার বুঝতে পেরেছে যে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য চীনের সহযোগিতা অপরিহার্য। কিন্তু হাসিনা ইস্যুতে যদি সম্পর্ক খারাপ হয়, তবে কোন পথে হাটবে ভারত?

এদিকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ‘সীমিত’ করার জন্য ভারতের উপর চাপ দিয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু সেই চাপের মুখে ভারত নতি স্বীকার করতে রাজি হয়নি। বরং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত করে ভারত। রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ হলেও সে দেশ নিয়ে নিয়ে কিন্তু ভারতেরএক ধরনের ‘আশঙ্কা’ বা ‘ভীতি’ও রয়েছে। এর কারণ হলো চীন। ভারতের আশঙ্কা রাশিয়ার সঙ্গে চীনের নৈকট্য বাড়তে পারে।

চীনের কারণে ভারতও কিন্তু রাশিয়ার উপর পুরপুরি নির্ভরশীল হতে চায় না। ভারত মনে করে, চীনের দিক থেকে চ্যালেঞ্জ বাড়তে পারে, সে ক্ষেত্রে তাদের অন্য অংশীদার থাকা জরুরি। ভারতের বিরুদ্ধে চীনের আগ্রাসনকে রাশিয়া কতটা সমর্থন করবে সে বিষয়ে ভারত নিজেকে আশ্বস্ত করতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে হাসিনা ইস্যু নতুন করে ভাবাচ্ছে ভারতকে। সার্বিক দিক বিবেচনায় পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, বিশ্ব বাজার থেকে ভারত একঘরে হয়ে যাচ্ছে না তো?

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

শেখ হাসিনা ইস্যুতে একঘরে হয়ে পড়ছে ভারত?

আপডেট সময় : ০৬:৫৯:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

 

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে যেন বিপদেই পড়েছে ভারত। শেখ হাসিনা দিল্লির কাছে সাময়িক সময়ের জন্য আশ্রয়ের অনুমতি চাইলেও দেশটিতে তার অবস্থান দীর্ঘ হয়েছে। ভারতের নামকরা কূটনীতিকরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য তদবির করলেও, গত ১২০ দিনেও তাতে সফল হয়ে উঠতে পারেননি।

কূটনীতির শক্তি নির্ভর করে একটি দেশ সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে কতটা শক্তিশালী। যে দেশ এ দুটি দিকে শক্তিশালী সে দেশের কূটনীতিকরাও বিশ্বে ততটা প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে বা বহুপক্ষীয় ফোরামগুলোতে নিজেদের কাজ উদ্ধার করে আনতে পারেন। কূটনীতিতে বিশ্বজুড়ে ভারতের বেশ সুনাম রয়েছে। তবে শেখ হাসিনা ইস্যুতে ভারতীয় কূটনীতিকদের শক্তি ও প্রভাবের অবস্থা কোথায় নেমেছে, তা এখন ভাবনায় ফেলেছে ভারতকে।

কর্তৃত্ববাদী শাসনের কারণে শেখ হাসিনা থেকে আগেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে পশ্চিমা দুনিয়া। হাসিনাকে তার পছন্দের পশ্চিমা দেশগুলো আশ্রয় দিতে চাচ্ছে না। শেখ হাসিনাকে সুরক্ষা দেওয়া ভারতের মর্যাদার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, শেখ হাসিনা ক্ষমতার পুরোটা সময় দিল্লি থেকে সমর্থন পেয়ে এসেছেন। এখন শেখ হাসিনার বিপদে দিল্লি যদি নৈতিকতার প্রশ্নে তার হাত ছেড়ে দেয়, তবে অঞ্চলের বাকি মিত্ররা কখনোই আর ভারতের ওপর ভরসা করবে না। ফলে নৈতিকতার দিকটা ছাড় দিয়েও শেখ হাসিনাকে যেকোনো মূল্যে আগলে রাখছে দেশটি।

এমন পরিস্থিতিতে ভারত-যুক্তরাষ্ট-চীন ত্রিপাক্ষিক সম্পর্কে কি প্রভাব ফেলে সেটাই দেখার বিষয়। হেনরি কিসিঞ্জার একবার বলেছিলেন, ‘আমেরিকার শত্রু হওয়া বিপজ্জনক হতে পারে, কিন্তু আমেরিকার বন্ধু হওয়া ভয়াবহ।’ কথাগুলো ভারতের জন্য পুরোপুরি মানানসই বলে মনে হচ্ছে।

এদিকে চীনা পণ্যের ওপর ভারত মুখে মুখে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কথা বললেও চীনের সঙ্গে তার বাণিজ্য বেড়েছে এতোদিন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বাড়তি যে বাণিজ্য তা মূলত চীন থেকে করা আমদানির ওপর নির্ভরশীল। ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য চীনের প্রয়োজন থাকলেও চীনের ভারতের ওপর এমন কোনো নির্ভরতা নেই। শেষ পর্যন্ত চার বছর পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মোদি সরকার বুঝতে পেরেছে যে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য চীনের সহযোগিতা অপরিহার্য। কিন্তু হাসিনা ইস্যুতে যদি সম্পর্ক খারাপ হয়, তবে কোন পথে হাটবে ভারত?

এদিকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ‘সীমিত’ করার জন্য ভারতের উপর চাপ দিয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু সেই চাপের মুখে ভারত নতি স্বীকার করতে রাজি হয়নি। বরং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত করে ভারত। রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ হলেও সে দেশ নিয়ে নিয়ে কিন্তু ভারতেরএক ধরনের ‘আশঙ্কা’ বা ‘ভীতি’ও রয়েছে। এর কারণ হলো চীন। ভারতের আশঙ্কা রাশিয়ার সঙ্গে চীনের নৈকট্য বাড়তে পারে।

চীনের কারণে ভারতও কিন্তু রাশিয়ার উপর পুরপুরি নির্ভরশীল হতে চায় না। ভারত মনে করে, চীনের দিক থেকে চ্যালেঞ্জ বাড়তে পারে, সে ক্ষেত্রে তাদের অন্য অংশীদার থাকা জরুরি। ভারতের বিরুদ্ধে চীনের আগ্রাসনকে রাশিয়া কতটা সমর্থন করবে সে বিষয়ে ভারত নিজেকে আশ্বস্ত করতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে হাসিনা ইস্যু নতুন করে ভাবাচ্ছে ভারতকে। সার্বিক দিক বিবেচনায় পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, বিশ্ব বাজার থেকে ভারত একঘরে হয়ে যাচ্ছে না তো?