ঢাকা ০৩:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
নির্বাচন কে সামনে রেখে উত্তাল ঢাকা-১ দোহার-নবাবগঞ্জ আসন আটপাড়ায় কালী মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর কেন্দুয়ায় মানবপাচার মামলার আসামীরা রিমান্ডে মাস্টারমাইন্ডের নাম প্রকাশ করেছে ‎ ‎কেন্দুয়ায় মানবপাচারের মামলায় চীনা নাগরিকসহ দুই আসামীকে কারাগারে প্রেরণ কেন্দুয়া থেকে তিন নারীকে চীনে পাচারের চেষ্টা; চীনা নাগরিকসহ আটক দুইজন কেন্দুয়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার ৫ ‎কেন্দুয়ায় প্রকল্পের অনিয়ম তদন্তের সময় হাতাহাতি: ইউএনও আহত কেন্দুয়ায় প্রশাসনের অভিযানে অবৈধ জাল ধ্বংস ওসমান হাদী দাবিতে ঘনিষ্ঠ ভিডিও প্রচার, সামনে এলো আসল সত্য ব্লাড মুন দেখা যাবে রোববার, চাঁদ লাল হওয়ার কারণ কী? তিন দলই প্রধান উপদেষ্টার অধীনে নির্বাচন চায়: প্রেস সচিব টিউলিপ বাংলাদেশি এনআইডি ও পাসপোর্টধারী, রয়েছে টিআইএনও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক নববর্ষের অঙ্গীকার: প্রধান উপদেষ্টা নরেন্দ্র মোদিকে উপহার দেওয়া ছবিটি সম্পর্কে যা জানা গেল বিমসটেকের পরবর্তী চেয়ারম্যান ড. ইউনূস বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে মোদির ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রেসসচিব চীন সফরে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্যে ভারতে তোলপাড় ড. ইউনূসকে ঈদগাহের মুসল্লিরাঃ আপনি ৫ বছর দায়িত্বে থাকুন, এটাই দেশের মানুষের চাওয়া বাংলাদেশে বিশ্বমানের হাসপাতালের মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতে বিপ্লবের সূচনা!

‘নাম-পদবিতে ভুল, ছবি কাটা’ ডাকসু প্রেসকার্ডে অসংগতি যেন শিল্পকর্ম!

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ১২:১৩:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 38
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সাংবাদিকদের জন্য বিতরণ করা প্রেস কার্ড যেন ভুলভ্রান্তির শিল্পকর্মে পরিণত হয়েছে। কারও নাম কেটে দেওয়া হয়েছে, কারও ছবির অর্ধেক বিকৃত, কারও পদবি পাল্টে গেছে, আবার কারও কার্ডে বানান ভুলে ভরে গেছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের এমন এক নির্বাচনী আয়োজন, যেখানে সাংবাদিকদের জন্য বরাদ্দকৃত পরিচয়পত্রই পরিণত হয়েছে তামাশায়, সেটিই এখন ক্যাম্পাস ও সাংবাদিক মহলে আলোচনার প্রধান বিষয়। সাংবাদিকদের অনেকে প্রেস কার্ড হাতে পেয়ে বিব্রত, কেউ কেউ আবার হাস্যরসের ভঙ্গিতে বলছেন—এমন শিল্পকর্ম আমরা আগে দেখিনি।

ঢাকা মেইলের প্রধান প্রতিবেদক বোরহান উদ্দিন তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন— উদাসীন ঢাবি কর্তৃপক্ষ… ডাকসু নির্বাচনের আগে এই আয়োজনের সঙ্গে জড়িতদের আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মনে করি। কর্তৃপক্ষ কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন, কতটা উদাসীন তার প্রমাণ সাংবাদিকদের কার্ডে তাঁদের নাম, প্রতিষ্ঠান, পদবিতে ইচ্ছেমতো ভুল করা। আপনাদের লজ্জা না হলেও আমরা লজ্জিত…।

দৈনিক কালবেলার রিপোর্টার অন্তু মোজাহিদ তাঁর ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, প্রিয় চিফ রিটার্নিং অফিসার, ডাকসু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আমার ছবিটিতে এভাবে অস্ত্রোপচার না চালালেও পারতেন। একান্ত প্রয়োজন হলে সমানভাবে কাটাছেঁড়া করা যেত না? নোটিশে বলতেন, আমরা স্ট্যাম্প সাইজের ছবি সরবরাহ করতাম। অনেকের নামের বানান ভুল, ভুলভাল পদবি এমনকি হাতের লেখারও বেহালদশা। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে কী দক্ষ লোকবলের এতটাই সংকট পড়েছে? যে সাংবাদিকদের প্রেস কার্ডও সঠিকভাবে সরবরাহ করা গেল না!

বাংলাদেশের খবরের রিপোর্টার সোহেল হোসেন বলেন, ফ্যাসিস্ট বিদায়ের পর দেশের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচন ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন–২০২৫। ফলে আমার মতো দেশের তরুণ সংবাদকর্মীদের অনেকে আগ্রহভরে এবারের নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করতে প্রেস কার্ডের আবেদন করেছিলেন। তরুণ সাংবাদিকদের চাওয়া পূরণও করেছেন ডাকসু নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা। কিন্তু কার্ডে কারও মাথা কাটা, রিপোর্টার বানানে ভুল। তবে সবচেয়ে দৃষ্টিকটু লেগেছে একজন মাল্টিমিডিয়া সংবাদকর্মীর পদবি লেখা হয়েছে আপত্তিকর ভাষায়। আশা করি ঢাবির যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নজর দেবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির এক সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার নামের বানান ভুল লেখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে এটা কেবল অসাবধানতা নয়, সাংবাদিকদের মর্যাদার প্রতি অবজ্ঞা।

আরেকজন ক্যাম্পাস সাংবাদিক আক্ষেপ করে বলেন, প্রেস কার্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পর্যন্ত সঠিকভাবে লেখা হয়নি। ডাকসু নির্বাচন তো আমাদের জন্য গুরুতর একটি বিষয়। অথচ এখানে যে অব্যবস্থা চলছে, তা হাস্যকর।

প্রসঙ্গত, ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে সাংবাদিকদের আগ্রহ সব সময়ই তীব্র থাকে। প্রশাসনের দায়িত্ব থাকে তাঁদের যথাযথভাবে সহযোগিতা করা, যাতে তাঁরা নির্বিঘ্নে সংবাদ সংগ্রহ করতে পারেন। কিন্তু এবারের প্রেস কার্ড বিতরণ নিয়ে যে সমালোচনা শুরু হয়েছে, তা শুধু অব্যবস্থাপনার পরিচয় নয়; বরং পুরো নির্বাচন আয়োজনে শৃঙ্খলার অভাবকেই সামনে নিয়ে আসছে।

সাংবাদিকদের দাবি, প্রেস কার্ডে এমন অসংগতি অগ্রহণযোগ্য। তাঁরা চাইছেন দ্রুত নতুন ও সঠিকভাবে প্রস্তুত করা প্রেস কার্ড সরবরাহ হোক। না হলে সংবাদ সংগ্রহে নানা বিভ্রান্তি ও সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে।

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং অফিসার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, প্রায় ১২ থেকে ১৩ শ’ প্রেস কার্ডের আবেদন জমা পড়েছিল। এত বেশি আবেদন একসঙ্গে যাচাই করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি, তাই বিষয়টি পিআরও সেকশনের হাতে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে কর্মচারীদের অসতর্কতার কারণে বানানসহ কিছু ভুল হয়েছে। তবে এসব ভুল নিয়ে সাংবাদিকরা চাইলে সরাসরি অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন, তাৎক্ষণিকভাবে সংশোধন করা হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে আর এ ধরনের ভুল না হয়, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

‘নাম-পদবিতে ভুল, ছবি কাটা’ ডাকসু প্রেসকার্ডে অসংগতি যেন শিল্পকর্ম!

আপডেট সময় : ১২:১৩:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সাংবাদিকদের জন্য বিতরণ করা প্রেস কার্ড যেন ভুলভ্রান্তির শিল্পকর্মে পরিণত হয়েছে। কারও নাম কেটে দেওয়া হয়েছে, কারও ছবির অর্ধেক বিকৃত, কারও পদবি পাল্টে গেছে, আবার কারও কার্ডে বানান ভুলে ভরে গেছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের এমন এক নির্বাচনী আয়োজন, যেখানে সাংবাদিকদের জন্য বরাদ্দকৃত পরিচয়পত্রই পরিণত হয়েছে তামাশায়, সেটিই এখন ক্যাম্পাস ও সাংবাদিক মহলে আলোচনার প্রধান বিষয়। সাংবাদিকদের অনেকে প্রেস কার্ড হাতে পেয়ে বিব্রত, কেউ কেউ আবার হাস্যরসের ভঙ্গিতে বলছেন—এমন শিল্পকর্ম আমরা আগে দেখিনি।

ঢাকা মেইলের প্রধান প্রতিবেদক বোরহান উদ্দিন তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন— উদাসীন ঢাবি কর্তৃপক্ষ… ডাকসু নির্বাচনের আগে এই আয়োজনের সঙ্গে জড়িতদের আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মনে করি। কর্তৃপক্ষ কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন, কতটা উদাসীন তার প্রমাণ সাংবাদিকদের কার্ডে তাঁদের নাম, প্রতিষ্ঠান, পদবিতে ইচ্ছেমতো ভুল করা। আপনাদের লজ্জা না হলেও আমরা লজ্জিত…।

দৈনিক কালবেলার রিপোর্টার অন্তু মোজাহিদ তাঁর ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, প্রিয় চিফ রিটার্নিং অফিসার, ডাকসু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আমার ছবিটিতে এভাবে অস্ত্রোপচার না চালালেও পারতেন। একান্ত প্রয়োজন হলে সমানভাবে কাটাছেঁড়া করা যেত না? নোটিশে বলতেন, আমরা স্ট্যাম্প সাইজের ছবি সরবরাহ করতাম। অনেকের নামের বানান ভুল, ভুলভাল পদবি এমনকি হাতের লেখারও বেহালদশা। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে কী দক্ষ লোকবলের এতটাই সংকট পড়েছে? যে সাংবাদিকদের প্রেস কার্ডও সঠিকভাবে সরবরাহ করা গেল না!

বাংলাদেশের খবরের রিপোর্টার সোহেল হোসেন বলেন, ফ্যাসিস্ট বিদায়ের পর দেশের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচন ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন–২০২৫। ফলে আমার মতো দেশের তরুণ সংবাদকর্মীদের অনেকে আগ্রহভরে এবারের নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করতে প্রেস কার্ডের আবেদন করেছিলেন। তরুণ সাংবাদিকদের চাওয়া পূরণও করেছেন ডাকসু নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা। কিন্তু কার্ডে কারও মাথা কাটা, রিপোর্টার বানানে ভুল। তবে সবচেয়ে দৃষ্টিকটু লেগেছে একজন মাল্টিমিডিয়া সংবাদকর্মীর পদবি লেখা হয়েছে আপত্তিকর ভাষায়। আশা করি ঢাবির যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নজর দেবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির এক সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার নামের বানান ভুল লেখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে এটা কেবল অসাবধানতা নয়, সাংবাদিকদের মর্যাদার প্রতি অবজ্ঞা।

আরেকজন ক্যাম্পাস সাংবাদিক আক্ষেপ করে বলেন, প্রেস কার্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পর্যন্ত সঠিকভাবে লেখা হয়নি। ডাকসু নির্বাচন তো আমাদের জন্য গুরুতর একটি বিষয়। অথচ এখানে যে অব্যবস্থা চলছে, তা হাস্যকর।

প্রসঙ্গত, ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে সাংবাদিকদের আগ্রহ সব সময়ই তীব্র থাকে। প্রশাসনের দায়িত্ব থাকে তাঁদের যথাযথভাবে সহযোগিতা করা, যাতে তাঁরা নির্বিঘ্নে সংবাদ সংগ্রহ করতে পারেন। কিন্তু এবারের প্রেস কার্ড বিতরণ নিয়ে যে সমালোচনা শুরু হয়েছে, তা শুধু অব্যবস্থাপনার পরিচয় নয়; বরং পুরো নির্বাচন আয়োজনে শৃঙ্খলার অভাবকেই সামনে নিয়ে আসছে।

সাংবাদিকদের দাবি, প্রেস কার্ডে এমন অসংগতি অগ্রহণযোগ্য। তাঁরা চাইছেন দ্রুত নতুন ও সঠিকভাবে প্রস্তুত করা প্রেস কার্ড সরবরাহ হোক। না হলে সংবাদ সংগ্রহে নানা বিভ্রান্তি ও সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে।

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং অফিসার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, প্রায় ১২ থেকে ১৩ শ’ প্রেস কার্ডের আবেদন জমা পড়েছিল। এত বেশি আবেদন একসঙ্গে যাচাই করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি, তাই বিষয়টি পিআরও সেকশনের হাতে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে কর্মচারীদের অসতর্কতার কারণে বানানসহ কিছু ভুল হয়েছে। তবে এসব ভুল নিয়ে সাংবাদিকরা চাইলে সরাসরি অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন, তাৎক্ষণিকভাবে সংশোধন করা হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে আর এ ধরনের ভুল না হয়, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।