‘৫২ থেকে যতগুলো গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে ২৪ সব থেকে ব্যাপক ও গভীর’
- আপডেট সময় : ১২:২৪:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / 128
লেখক, গবেষক ও বামপন্থি রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমর রোববার সকালে ঢাকার একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) তার দীর্ঘ সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। এতে তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস ও পূর্বাপর ঘটনাবলির গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ তুলে ধরেন। আলোচিত সাক্ষাৎকারটি আবার প্রকাশ করা হয়েছে। বদরুদ্দীন উমর বলেন, ৫২ থেকে যতগুলো গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে ২৪ সব থেকে ব্যাপক ও গভীর।
শেখ মুজিবের শাসনের পতন এবং ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ২০২৪ এর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে প্রাণভয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। বাংলাদেশে সাড়ে পনেরো বছরের ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শাসনের অবসান হয়েছে। ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধের পর এই গণঅভ্যুত্থান একটি যুগান্তকারী ঘটনা। ১৯৫২ সাল থেকে এখানে পরপর যে গণঅভ্যুত্থানগুলো ঘটেছে তার মধ্যে জুলাই মাসের এই গণঅভ্যুত্থান হলো সব থেকে ব্যাপক, গভীর এবং শাসকদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক।
উমর বলেন, ৫ আগস্ট, ২০২৪ বাংলাদেশ রাহুমুক্ত হয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার দলের সর্বস্তরের নেতা-মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন সাংগঠনিক কমিটির নেতা থেকে একেবারে নিচের স্তরের নেতারাও ঘরবাড়ি ছেড়ে পলায়ন করেছে। ২০০৯ সাল থেকে পনেরো বছরের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে বাংলাদেশকে অক্টোপাসের মতো কামড়ে ধরে রেখেছিল সে কামড় থেকে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুক্ত হয়ে জনগণ এখন যে স্বাধীনতা উপভোগ করছেন এতটা স্বাধীনতা- ১৯৭২ সালের পর আর কখনো ঘটেনি।
এদিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের যে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, সে সময়ের একটি মামলার সাক্ষী ছিলেন সদ্যপ্রয়াত বদরুদ্দীন উমর। তিনি ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দলের কাছে লিখিত জবানবন্দি দিয়ে গেছেন।
যুগান্তরের হাতে এসেছে সেই জবানবন্দির কপি। যাতে তিনি বলেছেন স্বাধীনতা পূর্ব ও পরবর্তী আওয়ামী লীগ সম্পর্কিত নিজের অভিজ্ঞতা। বলেছেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের কথাও।
তিনি বলেছেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান শুধু বাংলাদেশে নয়, গোটা ভারতীয় উপমহাদেশে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। ভারত বা পাকিস্তানে এমন জনতার শক্তি ও ব্যাপকতার গণ-অভ্যুত্থান কখনো দেখা যায়নি। বাংলাদেশ নিজেই একটি গণ-অভ্যুত্থানের দেশ ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৯০ সালের ঘটনাগুলো তার উদাহরণ।
তবে এসব অভ্যুত্থানের মধ্যে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান ছিল সবচেয়ে বিস্ফোরক, সবচেয়ে রূপান্তরমূলক। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভাষার স্বীকৃতি এসেছিল, ১৯৬৯-এ আইয়ুব খানের পতন হয়েছিল, ১৯৯০-এ এরশাদের পতনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু এসব আন্দোলনে এমন সর্বগ্রাসী ভাঙন, এমন পলায়নপর সরকার বা দল দেখা যায়নি।




















