ঢাকা ০৭:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
ত্রাণের টাকা কেন ব্যাংকে রেখেছেন সমন্বয়করা? পুলিশ ও বিশেষজ্ঞদের ঢাকার যানজট নিরসনের উপায় খুঁজতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা শাহরিয়ার কবির গ্রেফতার তিতাস গ্যাস পরিচালনা পর্ষদ থেকে মতিউর রহমান চৌধুরীর নাম প্রত্যাহার ভারতের কাছে প্রায় ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশন: ১০০ কোটির স্থলে খরচ হবে ১ কোটিরও কম! ‘শেখ হাসিনা আরেকটি দেশের মুখ্যমন্ত্রীও হতে চেয়েছিলেন’ ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিল সরকার স্বার্থ হাসিলে ভোলায় গ্যাস পাওয়ার কথা চেপে যান বিপু অভিজ্ঞতা নেই তবু বিমানের কান্ট্রি ম্যানেজার তিতাস গ্যাসের পরিচালক হলেন মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী যেভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় দখলে নিলো ‘চৌধুরী পরিবার’ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাওয়াদের তালিকা হচ্ছে: ফারুক-ই-আজম অন্তর্বর্তী সরকারকে ২০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র পুলিশের ‘ট্রমা’ কাটবে কী করে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনেক কিছুরই অদৃশ্য নীতিনির্ধারক ছিলেন সজীব ওয়াজেদ জয় বৃষ্টি ও তাপমাত্রা নিয়ে নতুন বার্তা আবহাওয়া অফিসের ড. ইউনূসের কূটনীতিতে বিস্মিত ভারত কেমন ছিল বাফুফেতে কাজী সালাহউদ্দিনের ১৬ বছর? অর্থ লোপাটে বাপ-বেটার মহারেকর্ড

জনমনে হতাশা ও ক্ষোভই হিরো আলমের উত্থানের কারণ

তাহসিন চৌধুরী
  • আপডেট সময় : ০৮:৪২:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৫০১৩ বার পড়া হয়েছে
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পুরো একটা বিরুদ্ধ পরিবেশের বিপরীতে একা দাঁড়িয়ে কিভাবে নিজের ইচ্ছে ও স্বপ্নপূরণ করতে হয় তার জন্য আমাদের অনুপ্রেরণা হতে পারে হিরো আলমের জীবনী

তার টাকা-পয়সা, খ্যাতি, শিক্ষা কিংবা রূপ—কিছুই ছিলো না। একটা নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্ম। ছোটবেলায় একবেলা খাবার খেতে পারলে দুইবেলা উপবাস থাকা লাগছে, বাবা চানাচুর বিক্রি করে সংসার চালাতো। সারাদিন হকারি করে রাতে ফিরেই স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করা ছিলো তার বাবার নিত্যদিনের কাজ।

ক্লাশ থ্রি বা ফোরে থাকা অবস্থায় এক বৃষ্টিস্নাত রাতে হিরো আলম ওরফে আশরাফুল আলমের মাকে মেরে ছেলেকেসহ ঘর থেকে বের করে দেয়। সে রাতে হিরো আলম মায়ের সাথে চলে আসেন নানার বাড়িতে। এখানেই তার শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি ঘটে। তারপর ক্যাসেটের দোকান দিয়ে পরিবার চালিয়েছেন। কিন্তু তার স্বপ্ন ছিলো অনেক বড়ো। বলতে গেলে আকাশকুসুম কল্পনা। সিনেমায় অভিনয় করা।

সে যত পরিচালকের কাছে ততজনই তাকে অপমান, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে বিদায় করে দিছে। একটা বিরুদ্ধ পরিবেশে বিপরীতে একাই লড়াই করেছে। বলা যায় সফলও হয়েছে। আজকে হয়ত আপনি তাকে ঘৃণা করতে পারেন, মূর্খ বলে গালাগালি করতে পারেন। করেন সমস্যা নাই, কিন্তু তার আগে আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিন—

আচ্ছা আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় এতো এতো ট্রল, হাসাহাসির শিকার হতেন, কখনো এভাবে টিকে থাকতে পারতেন, নাকি তার আগেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়তেন?

এতো এতো মানুষের কাছে তুচ্ছতাচ্ছিল্য, গালমন্দের শিকার হওয়ার পরও নিজের স্বপ্নপূরণ করতে এভাবে লড়াই করে যেতে পারতেন?

আমার মনে হয় না আপনারা কেউ উত্তর – হ্যা দেবেন। অথচ দেখেন হিরো আলম কিন্তু পেরেছে। আশরাফুল আলম থেকে নিজের নাৃ হিরো আলম বানাতে পেরেছে।

সে মাত্র ক্লাস থ্রি-ফোর পর্যন্ত পড়ে যে চমৎকারভাবে সাংবাদিকদের নানান কটাক্ষের জবাব দেয় তাতে তার কাছ থেকে শিক্ষিত সমাজের শেখার অনেক কিছু আছে। নিচে দুই-একটা নমুনা দিই—

একবার চ্যানেল টুয়েন্টিফোরে এক উপস্থাপক জিজ্ঞেস করেছিলো, আপনি এত প্রতিভার চাপ সামলান কী করে?

হিরো আলম খুব চমৎকারভাবে উত্তর দিছে, দেখেন আমি গান গাইতে পারি না, অভিনয় পারি না জানি। কিন্তু এরপরও আমি আমার মনের আনন্দের জন্য অভিনয় করতাম। আমি কয়েকটা সিনেমা বানিয়েছি। সেই সিনেমায় গানের জন্য যখন আমি বিভিন্ন গীতিকার, সুরকার, শিল্পীদের কাছে গান চাইলাম, তারা দিল না। তারা বলল, আমাকে গান দিলে তাদের মানসম্মান থাকবে না। তখন আমি বাধ্য হয়ে নিজে গাওয়া শুরু করলাম।

আমি গাইতে পারি না তাও জানি। আল্লাহতালা আমাকে গানের গলা দেননি। তাই বলে কি আমি আমার আনন্দের জন্য গাইতে পারব না?

কয়দিন আগে সাংবাদিক জিজ্ঞেস করছিলো, আপনার কী যোগ্যতা আছে আপনি এমপি নির্বাচন করার?

সে কী উত্তর দিয়েছে জানেন? শুনুন – দেখেন নায়িকা মাহিয়া মাহি চেষ্টা করল, ক্রিকেটার মাশরাফি নির্বাচন করল, মমতাজ নির্বাচন করল, তাদেরকে কখনো এই প্রশ্ন করেছেন, তাদের কী যোগ্যতা আছে এমপি ইলেকশন করার! তারা তো ক্রিকেট খেলেছে, কেউ অভিনয় করেছে, কেউ গান গাইছে। দেখেন আমার পড়ালেখা নাই কিন্তু আমার স্বপ্ন এবং ইচ্ছে আছে মানুষের জন্য কাজ করার। আমি আমার সাধ্যমতো মানুষের পাশে থেকে কাজ করার চেষ্টা করব।

কয়দিন আগে নির্বাচন কমিশন তার প্রার্থীতা বাতিল করেছে, কিন্তু সে দমিয়ে যায়নি। লড়াই করে প্রার্থীতা ফিরে এনেছে এবং বগুড়া ৬ আসন উপ নির্বাচনে একতারা মার্কায় নির্বাচন করবেন।

আপনি ঘৃণা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে পারেন, কিন্তু এই হিরো আলম থেকে আমি প্রতিনিয়ত শিখি। কিভাবে একটা বিরুদ্ধ পরিবেশে বিপরীতে একাই লড়াই চালিয়ে যেতো হয়, কিভাবে নিজের স্বপ্নপূরণে লেগে থাকতে হয়— সেটা Hero Alom -এর জীবনের দিকে তাকালে শেখা যাবে!

লেখা Tahasin Chowdhury Sheehad

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

জনমনে হতাশা ও ক্ষোভই হিরো আলমের উত্থানের কারণ

আপডেট সময় : ০৮:৪২:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩

পুরো একটা বিরুদ্ধ পরিবেশের বিপরীতে একা দাঁড়িয়ে কিভাবে নিজের ইচ্ছে ও স্বপ্নপূরণ করতে হয় তার জন্য আমাদের অনুপ্রেরণা হতে পারে হিরো আলমের জীবনী

তার টাকা-পয়সা, খ্যাতি, শিক্ষা কিংবা রূপ—কিছুই ছিলো না। একটা নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্ম। ছোটবেলায় একবেলা খাবার খেতে পারলে দুইবেলা উপবাস থাকা লাগছে, বাবা চানাচুর বিক্রি করে সংসার চালাতো। সারাদিন হকারি করে রাতে ফিরেই স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করা ছিলো তার বাবার নিত্যদিনের কাজ।

ক্লাশ থ্রি বা ফোরে থাকা অবস্থায় এক বৃষ্টিস্নাত রাতে হিরো আলম ওরফে আশরাফুল আলমের মাকে মেরে ছেলেকেসহ ঘর থেকে বের করে দেয়। সে রাতে হিরো আলম মায়ের সাথে চলে আসেন নানার বাড়িতে। এখানেই তার শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি ঘটে। তারপর ক্যাসেটের দোকান দিয়ে পরিবার চালিয়েছেন। কিন্তু তার স্বপ্ন ছিলো অনেক বড়ো। বলতে গেলে আকাশকুসুম কল্পনা। সিনেমায় অভিনয় করা।

সে যত পরিচালকের কাছে ততজনই তাকে অপমান, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে বিদায় করে দিছে। একটা বিরুদ্ধ পরিবেশে বিপরীতে একাই লড়াই করেছে। বলা যায় সফলও হয়েছে। আজকে হয়ত আপনি তাকে ঘৃণা করতে পারেন, মূর্খ বলে গালাগালি করতে পারেন। করেন সমস্যা নাই, কিন্তু তার আগে আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিন—

আচ্ছা আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় এতো এতো ট্রল, হাসাহাসির শিকার হতেন, কখনো এভাবে টিকে থাকতে পারতেন, নাকি তার আগেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়তেন?

এতো এতো মানুষের কাছে তুচ্ছতাচ্ছিল্য, গালমন্দের শিকার হওয়ার পরও নিজের স্বপ্নপূরণ করতে এভাবে লড়াই করে যেতে পারতেন?

আমার মনে হয় না আপনারা কেউ উত্তর – হ্যা দেবেন। অথচ দেখেন হিরো আলম কিন্তু পেরেছে। আশরাফুল আলম থেকে নিজের নাৃ হিরো আলম বানাতে পেরেছে।

সে মাত্র ক্লাস থ্রি-ফোর পর্যন্ত পড়ে যে চমৎকারভাবে সাংবাদিকদের নানান কটাক্ষের জবাব দেয় তাতে তার কাছ থেকে শিক্ষিত সমাজের শেখার অনেক কিছু আছে। নিচে দুই-একটা নমুনা দিই—

একবার চ্যানেল টুয়েন্টিফোরে এক উপস্থাপক জিজ্ঞেস করেছিলো, আপনি এত প্রতিভার চাপ সামলান কী করে?

হিরো আলম খুব চমৎকারভাবে উত্তর দিছে, দেখেন আমি গান গাইতে পারি না, অভিনয় পারি না জানি। কিন্তু এরপরও আমি আমার মনের আনন্দের জন্য অভিনয় করতাম। আমি কয়েকটা সিনেমা বানিয়েছি। সেই সিনেমায় গানের জন্য যখন আমি বিভিন্ন গীতিকার, সুরকার, শিল্পীদের কাছে গান চাইলাম, তারা দিল না। তারা বলল, আমাকে গান দিলে তাদের মানসম্মান থাকবে না। তখন আমি বাধ্য হয়ে নিজে গাওয়া শুরু করলাম।

আমি গাইতে পারি না তাও জানি। আল্লাহতালা আমাকে গানের গলা দেননি। তাই বলে কি আমি আমার আনন্দের জন্য গাইতে পারব না?

কয়দিন আগে সাংবাদিক জিজ্ঞেস করছিলো, আপনার কী যোগ্যতা আছে আপনি এমপি নির্বাচন করার?

সে কী উত্তর দিয়েছে জানেন? শুনুন – দেখেন নায়িকা মাহিয়া মাহি চেষ্টা করল, ক্রিকেটার মাশরাফি নির্বাচন করল, মমতাজ নির্বাচন করল, তাদেরকে কখনো এই প্রশ্ন করেছেন, তাদের কী যোগ্যতা আছে এমপি ইলেকশন করার! তারা তো ক্রিকেট খেলেছে, কেউ অভিনয় করেছে, কেউ গান গাইছে। দেখেন আমার পড়ালেখা নাই কিন্তু আমার স্বপ্ন এবং ইচ্ছে আছে মানুষের জন্য কাজ করার। আমি আমার সাধ্যমতো মানুষের পাশে থেকে কাজ করার চেষ্টা করব।

কয়দিন আগে নির্বাচন কমিশন তার প্রার্থীতা বাতিল করেছে, কিন্তু সে দমিয়ে যায়নি। লড়াই করে প্রার্থীতা ফিরে এনেছে এবং বগুড়া ৬ আসন উপ নির্বাচনে একতারা মার্কায় নির্বাচন করবেন।

আপনি ঘৃণা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে পারেন, কিন্তু এই হিরো আলম থেকে আমি প্রতিনিয়ত শিখি। কিভাবে একটা বিরুদ্ধ পরিবেশে বিপরীতে একাই লড়াই চালিয়ে যেতো হয়, কিভাবে নিজের স্বপ্নপূরণে লেগে থাকতে হয়— সেটা Hero Alom -এর জীবনের দিকে তাকালে শেখা যাবে!

লেখা Tahasin Chowdhury Sheehad