ঢাকা ০১:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫, ২১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মঈনুদ্দিনের পরিচয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যবের পরিচয় শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে সব প্রমাণ সরকারের কাছে আছে জেলায় জেলায় সরকারি অর্থে ‘আওয়ামী পল্লি’ উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত হচ্ছেন সি আর আবরার উপদেষ্টা হচ্ছেন ড. আমিনুল ইসলাম পদত্যাগ করলেন নাহিদ ইসলাম বাবরের জীবন থেকে ১৭ বছর কেড়ে নেয় ‘প্রথম আলো’ সোমবার থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চাপমুক্ত প্রশাসন এবং ড. ইউনূসের দর্শন ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ পালনের ঘোষণা আনিসুল হকের মুক্তি চেয়ে পোস্টার দিল্লিতে গৃহবন্দী শেখ হাসিনা? গ্যাস-বিদ্যুতে ভয়াবহ ভোগান্তির আশঙ্কা ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ মোদি-হাসিনা মাইনাস: ট্রাম্পের আস্থায় এখন ড. ইউনূস! মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের বাংলাদেশ নিয়ে ভাইরাল ভিডিওর আসল ঘটনা আমি ফিরব, আমাদের শহিদদের প্রতিশোধ নেব’: শেখ হাসিনা অপরাধী হাসিনাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপে ভারত

হাসিনা আর ইন্ডিয়া মাঝে মাঝে আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে দেয় : পিনাকী ভট্টাচার্য

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৪:২৮:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫
  • / 31
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাম্প্রতিক এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিশিষ্ট অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিনাকী ভট্টাচার্য দাবি করেছেন, তিনি তার শত্রু ভাগ্য নিয়ে সন্তুষ্ট নন এবং আরও শক্তিশালী শত্রু চান। তার এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে।

পিনাকী বলেন, “শত্রুর কারণে দেশের বা দলের ভেতরে বিভেদ কমে এবং নেতার চারপাশে ঐক্য তৈরি হয়। হাসিনা আর ইন্ডিয়া মাঝে মাঝে আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে দেয়।”

পিনাকীর ব্যাখ্যা: ‘কেন শক্তিশালী শত্রু প্রয়োজন?’

স্ট্যাটাসে পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, রাজনীতিতে শত্রু থাকা একটি আশীর্বাদ। তবে তার মতে, শত্রুরা যদি দুর্বল হয়, তাহলে তা প্রকৃত চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে না। তাই তিনি চান, তার শত্রুরা আরও শক্তিশালী হোক, যাতে তিনি আরও কৌশলী, আত্মবিশ্বাসী ও বুদ্ধিমান হয়ে উঠতে পারেন।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, শক্তিশালী শত্রু থাকা মানেই অনুসারীদের মধ্যে ঐক্য বৃদ্ধি পাওয়া। কারণ যখন একজন ব্যক্তি প্রবল শত্রুতার শিকার হন, তখন তার অনুরাগীরা তাকে রক্ষার জন্য আরও সংহত হয়ে ওঠে। শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করতে হলে বুদ্ধিমত্তা ও কৌশল উন্নত করতে হয়, যা ব্যক্তিকে সবসময় সজাগ ও সৃজনশীল রাখে।

‘ধর্ম ও ইতিহাস থেকে উদাহরণ’

পিনাকী তার ব্যাখ্যা সমর্থনে বিভিন্ন ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন:

নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে প্রবল শত্রুতা ছিল, যা তাকে আরও ধৈর্যশীল, কৌশলী ও পরিশুদ্ধ করেছিল। পবিত্র কুরআনের সূরা আল-ইনশিরাহ (৯৪:৬)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “প্রত্যেক সংকটের সঙ্গে সহজীকরণ রয়েছে।”

হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ভগবদ গীতায় কৃষ্ণ অর্জুনকে বোঝান, জীবন সংগ্রামময় এবং শত্রুতা আত্ম-উন্নয়নের সুযোগ দেয়।

যিশুর ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার পর খ্রিস্টান ধর্ম আরও শক্তিশালী হয়েছিল।

গৌতম বুদ্ধ বলেছেন, প্রতিকূলতা অহংকার ধ্বংস করে এবং প্রকৃত জ্ঞানের পথে এগিয়ে দেয়।

 

 

‘রাজনীতিতে শত্রুতা ও জনপ্রিয়তা’

সমসাময়িক রাজনীতির দৃষ্টান্ত টেনে পিনাকী ব্যাখ্যা করেন, শত্রুতা রাজনীতিবিদদের শক্তিশালী করে তোলে। তিনি বলেন, আধুনিক বিশ্বে অনেক নেতা শত্রুতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করেছেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্প, নরেন্দ্র মোদি ও রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের নাম উল্লেখ করেন।

তার ভাষায়, যখন এসব নেতাদের আক্রমণ করা হয়েছিল, তখন জনগণ তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে তারা আরও জনপ্রিয় হয়েছেন। এ ধরনের শত্রুতার কারণে দলের বা রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বিভাজন কমে এবং নেতার চারপাশে ঐক্য সৃষ্টি হয়।

পিনাকী বলেন, শত্রুর কারণে দেশের বা দলের ভেতরে বিভেদ কমে এবং নেতার চারপাশে ঐক্য তৈরি হয়। হাসিনা আর ইন্ডিয়া মাঝে মাঝে আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে দেয়।

পিনাকী আরও বলেন, শত্রুতা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখে। যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি আলোচিত হন, তারাই রাজনীতিতে বেশি সফল হন। শত্রুর উপস্থিতি বিতর্ক সৃষ্টি করে, যা একজন ব্যক্তিকে আরও প্রচারের মধ্যে রাখে।

‘দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি’

তার স্ট্যাটাসে দার্শনিক হেগেলের দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। হেগেলের মতে, প্রতিটি মতবাদের (Thesis) বিপরীতে একটি বিপরীত মতবাদ (Antithesis) থাকে, যা দ্বন্দ্বের মাধ্যমে নতুন কিছু তৈরি করে (Synthesis)। শত্রুতাও ঠিক এভাবেই নতুন শক্তির জন্ম দেয়।

তিনি দার্শনিক ফ্রিডরিখ নিটশের বিখ্যাত উক্তিও তুলে ধরেন, “যা আমাকে মারে না, তা আমাকে আরও শক্তিশালী করে।” অর্থাৎ শত্রুতা একজন মানুষকে আরও দক্ষ ও অভিজ্ঞ করে তোলে।

তার স্ট্যাটাসের শেষে তিনি লিখেছেন, “হে খোদা, আমাকে আরও একটু বুদ্ধিমান, আরও একটু জ্ঞানী, আরও একটু শক্তিশালী শত্রু দাও। সবাই বলেন, আমিন।”

তার এই ব্যতিক্রমী বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং অনেকেই এ নিয়ে মতামত দিচ্ছেন। কেউ একে গভীর রাজনৈতিক কৌশল বলে মনে করছেন, আবার কেউ এর পেছনে বিদ্রুপের ইঙ্গিত খুঁজছেন। তবে এটুকু স্পষ্ট, পিনাকী ভট্টাচার্যের এই স্ট্যাটাস রাজনীতির শত্রু-মিত্র বিশ্লেষণের এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

হাসিনা আর ইন্ডিয়া মাঝে মাঝে আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে দেয় : পিনাকী ভট্টাচার্য

আপডেট সময় : ০৪:২৮:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫

সাম্প্রতিক এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিশিষ্ট অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিনাকী ভট্টাচার্য দাবি করেছেন, তিনি তার শত্রু ভাগ্য নিয়ে সন্তুষ্ট নন এবং আরও শক্তিশালী শত্রু চান। তার এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে।

পিনাকী বলেন, “শত্রুর কারণে দেশের বা দলের ভেতরে বিভেদ কমে এবং নেতার চারপাশে ঐক্য তৈরি হয়। হাসিনা আর ইন্ডিয়া মাঝে মাঝে আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে দেয়।”

পিনাকীর ব্যাখ্যা: ‘কেন শক্তিশালী শত্রু প্রয়োজন?’

স্ট্যাটাসে পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, রাজনীতিতে শত্রু থাকা একটি আশীর্বাদ। তবে তার মতে, শত্রুরা যদি দুর্বল হয়, তাহলে তা প্রকৃত চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে না। তাই তিনি চান, তার শত্রুরা আরও শক্তিশালী হোক, যাতে তিনি আরও কৌশলী, আত্মবিশ্বাসী ও বুদ্ধিমান হয়ে উঠতে পারেন।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, শক্তিশালী শত্রু থাকা মানেই অনুসারীদের মধ্যে ঐক্য বৃদ্ধি পাওয়া। কারণ যখন একজন ব্যক্তি প্রবল শত্রুতার শিকার হন, তখন তার অনুরাগীরা তাকে রক্ষার জন্য আরও সংহত হয়ে ওঠে। শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করতে হলে বুদ্ধিমত্তা ও কৌশল উন্নত করতে হয়, যা ব্যক্তিকে সবসময় সজাগ ও সৃজনশীল রাখে।

‘ধর্ম ও ইতিহাস থেকে উদাহরণ’

পিনাকী তার ব্যাখ্যা সমর্থনে বিভিন্ন ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন:

নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে প্রবল শত্রুতা ছিল, যা তাকে আরও ধৈর্যশীল, কৌশলী ও পরিশুদ্ধ করেছিল। পবিত্র কুরআনের সূরা আল-ইনশিরাহ (৯৪:৬)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “প্রত্যেক সংকটের সঙ্গে সহজীকরণ রয়েছে।”

হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ভগবদ গীতায় কৃষ্ণ অর্জুনকে বোঝান, জীবন সংগ্রামময় এবং শত্রুতা আত্ম-উন্নয়নের সুযোগ দেয়।

যিশুর ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার পর খ্রিস্টান ধর্ম আরও শক্তিশালী হয়েছিল।

গৌতম বুদ্ধ বলেছেন, প্রতিকূলতা অহংকার ধ্বংস করে এবং প্রকৃত জ্ঞানের পথে এগিয়ে দেয়।

 

 

‘রাজনীতিতে শত্রুতা ও জনপ্রিয়তা’

সমসাময়িক রাজনীতির দৃষ্টান্ত টেনে পিনাকী ব্যাখ্যা করেন, শত্রুতা রাজনীতিবিদদের শক্তিশালী করে তোলে। তিনি বলেন, আধুনিক বিশ্বে অনেক নেতা শত্রুতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করেছেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্প, নরেন্দ্র মোদি ও রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের নাম উল্লেখ করেন।

তার ভাষায়, যখন এসব নেতাদের আক্রমণ করা হয়েছিল, তখন জনগণ তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে তারা আরও জনপ্রিয় হয়েছেন। এ ধরনের শত্রুতার কারণে দলের বা রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বিভাজন কমে এবং নেতার চারপাশে ঐক্য সৃষ্টি হয়।

পিনাকী বলেন, শত্রুর কারণে দেশের বা দলের ভেতরে বিভেদ কমে এবং নেতার চারপাশে ঐক্য তৈরি হয়। হাসিনা আর ইন্ডিয়া মাঝে মাঝে আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে দেয়।

পিনাকী আরও বলেন, শত্রুতা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখে। যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি আলোচিত হন, তারাই রাজনীতিতে বেশি সফল হন। শত্রুর উপস্থিতি বিতর্ক সৃষ্টি করে, যা একজন ব্যক্তিকে আরও প্রচারের মধ্যে রাখে।

‘দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি’

তার স্ট্যাটাসে দার্শনিক হেগেলের দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। হেগেলের মতে, প্রতিটি মতবাদের (Thesis) বিপরীতে একটি বিপরীত মতবাদ (Antithesis) থাকে, যা দ্বন্দ্বের মাধ্যমে নতুন কিছু তৈরি করে (Synthesis)। শত্রুতাও ঠিক এভাবেই নতুন শক্তির জন্ম দেয়।

তিনি দার্শনিক ফ্রিডরিখ নিটশের বিখ্যাত উক্তিও তুলে ধরেন, “যা আমাকে মারে না, তা আমাকে আরও শক্তিশালী করে।” অর্থাৎ শত্রুতা একজন মানুষকে আরও দক্ষ ও অভিজ্ঞ করে তোলে।

তার স্ট্যাটাসের শেষে তিনি লিখেছেন, “হে খোদা, আমাকে আরও একটু বুদ্ধিমান, আরও একটু জ্ঞানী, আরও একটু শক্তিশালী শত্রু দাও। সবাই বলেন, আমিন।”

তার এই ব্যতিক্রমী বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং অনেকেই এ নিয়ে মতামত দিচ্ছেন। কেউ একে গভীর রাজনৈতিক কৌশল বলে মনে করছেন, আবার কেউ এর পেছনে বিদ্রুপের ইঙ্গিত খুঁজছেন। তবে এটুকু স্পষ্ট, পিনাকী ভট্টাচার্যের এই স্ট্যাটাস রাজনীতির শত্রু-মিত্র বিশ্লেষণের এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে।