গ্রেপ্তারের পর চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম। র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে নেওয়ার সময়
গ্রেপ্তারের পর চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম। র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে নেওয়ার সময়ছবি: প্রথম আলো
জামালপুরের সাংবাদিক গোলাম রব্বানির ওপর নিজের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হামলা চালিয়েছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে তিনি পুরো ঘটনার নেতৃত্ব দেন। হত্যাকাণ্ড শেষে তিনি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে দূরসম্পর্কের আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করেন। সেখান থেকে তাঁকে ও তাঁর দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে এ ঘটনায় চারজন গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান। মাহমুদুলসহ গ্রেপ্তার চারজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান।
শনিবার দুপুরে পঞ্চগড়ের থেকে মাহমুদুলকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় নিয়ে আসে র্যাব।
‘ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা থেকেই চেয়ারম্যান ওই হামলা চালিয়েছেন’ উল্লেখ করে খন্দকার আল মঈন বলেন, জামালপুরের সাধুরপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম তাঁকে নিয়ে গণমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় সাংবাদিক গোলাম রব্বানির ওপর ক্ষুব্ধ হন। তিনি গোলাম রব্বানির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। গত বুধবার আদালত মামলাটি খারিজ করেন। এরপর রাব্বানি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এতে আরও খেপে যান ওই চেয়ারম্যান। পরে পরিকল্পিতভাবে নিজের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে রব্বানির ওপর হামলা চালান।
জামালপুরে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলমকে দুই সহযোগীসহ পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় কারওয়ান বাজার র্যাব অফিসে নিয়ে আসা হয়। শনিবার সন্ধ্যায়
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে থেকে মাহমুদুল ও তাঁর দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে নেওয়ার সময়
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে থেকে মাহমুদুল ও তাঁর দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে নেওয়ার সময়ছবি: প্রথম আলো
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে মোটরসাইকেলে করে যখন গোলাম রব্বানি বাড়ি ফিরছিলেন, তখন চেয়ারম্যান সন্ত্রাসীদের নিয়ে নির্জন স্থানে ওত পেতে ছিলেন। রব্বানি যখন তাঁর এক সহকর্মীসহ বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় পৌঁছান, তখন সন্ত্রাসী রেজাউল করিম রব্বানিকে ধাক্কা দিয়ে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেন। পরে তাঁকে মারতে মারতে পাশের অন্ধকার গলিতে নিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। তখন গোলাম রব্বানির চিৎকারে স্থানীয় ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে চেয়ারম্যান তাঁর বাহিনী নিয়ে পালিয়ে যান।
র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, গোলাম রব্বানিকে হত্যার ঘটনায় র্যাব চেয়ারম্যান মাহমুদুলসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অপর তিনজন হলেন মনিরুজ্জামান, জাকিরুল ইসলাম ও রেজাউল করিম।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র্যাবের গণমাধ্যম ও আইন বিভাগের পরিচালক বলেন, গোলাম রব্বানি মারা যাওয়ার পর মাহমুদুল মুঠোফোন ব্যবহার থেকে বিরত ছিলেন।
মাহমুদুল ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে জামালপুরের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানায় র্যাব।