ঢাকাশুক্রবার , ৯ জুন ২০২৩
  1. আন্তর্জাতিক
  2. ইতিহাস ঐতিয্য
  3. ইসলাম
  4. কর্পোরেট
  5. খেলার মাঠে
  6. জাতীয়
  7. জীবনযাপন
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. নারী কন্ঠ
  11. প্রেস বিজ্ঞপ্তি
  12. ফার্মাসিস্ট কর্নার
  13. ফিচার
  14. ফ্যাশন
  15. বিনোদন

হৃদয়বিদারক চার মৃত্যু

ডেস্ক নিউজ
জুন ৯, ২০২৩ ৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

একই দিনে মা ও শিশু সন্তানের মরদেহ উদ্ধারের দু’টি ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে কুমিল্লায়। হোমনা ও বুড়িচংয়ে প্রায় একই রকম পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করা হয় চারটি মরদেহ। বৃহষ্পতিবার এই মরদেহ গুলো উদ্ধার করে পুিলশ। কুমিল্লার অতিরক্তি পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আশফাকুজ্জামান বলেন, দু’টি ঘটনা একই সময়ে বিষয়টি যেমন কাকতালীয় তেমনি দুঃখজনক। এমন দৃশ্য সহ্য করার মতো না। দু’টি বিষয়ই পর্যবেক্ষণ করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।
জানা গেছে, হোমনা পৌরসভার একটি বসতঘরের বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে একই রশিতে ঝুলে থাকা মা ও ছেলের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টা উপজেলা সদরের ফকির পাড়ার জজ মিয়ার বাড়ি থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামে আধা পাকা ঘর থেকে মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে খাটের ওপর পড়ে ছিল চার বছরের শিশু হাজেরা আক্তারের মরদেহ। আর বসতঘরের আড়ার মধ্যে ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় মা জান্নাত বেগমের লাশ ঝুল ছিল। বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে। মরদেহগুলো উদ্ধার করে স্ব স্ব থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
দু’টি ঘটনাকেই প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যা বলে ধারনা করছে পুলিশ। তবে এসব মৃত্যুর পেছনে কী কারন থাকতে পারে সেসব খতিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিছেন হোমনা ও বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ।
এদিকে দুই উপজেলাতে এমন মা ও শিশুর একই সাথে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনা দুটিকেই গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।

হোমনায় এক রশিতে ঝুলন্ত মা-ছেলে:
কুমিল্লার হোমনায় ঘরের ভেতরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে থাকা মা ও সন্তানের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টা উপজেলা সদরের ফকির পাড়ার জজ মিয়ার বাড়ি থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন মো. বাবুর স্ত্রী সানজিদা আক্তার (২০) ও ২ বছরের শিশু আবদুল্লাহ। পুলিশ জানায়, স্থানীয় কমিশনারের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের বাহির থেকে শাবল দিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে একই রশিতে ঝুলে থাকা মা ও সন্তানের লাশ উদ্ধার কের। পরে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ দুটি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িকে থানায় নিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, স্বামী মো. বাবু উপজেলা সদরের চৌরাস্তায় ফর্নিচারের দোকানে কাজ করেন। শ্বশুর জজ মিয়া নসিমন চালক ও শাশুড়ি গৃহিণী। প্রতিবেশীরা জনান, তখন ঘরে কেউ ছিল না। স্বামী ও শ্বশুর নিজ নিজ কাজে চলে যাওয়ার পরেই আত্মহত্যার এই ঘটনা ঘটে।

সানজিদার বাবা রনি মিয়া বলেন, মো. বাবু ও সানজিদার তিন বছর আগে পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয়। পরে তাদের ঘরে আবদুল্লাহর জন্ম হয়। বছর খানেক আগে তাদের মধ্যে মনোমলিন্য ও ঝগড়াঝাটি হয়েছিল। প্রায়ই তাদের মধ্যে মোবাইল চালানো নিয়ে ঝগড়াঝাটি হতো। তবে অতি সম্প্রতি তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটির কোনো কথা শুনেননি।
স্বামী মো. বাবু বলেন, ‘রাতে স্ত্রী সন্তানের সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমিয়েছি। আমাদের মধ্যে কোনো কথাকাটি কিংবা কোনো সমস্যা হয়নি। সকালে প্রতিদিনের মতো এক সঙ্গেই ঘুম থেকে উঠি। আমি কাজে যাওয়ার আগে সে অন্য এক বাড়িতে গিয়েছিল। তখন তাকে নিজের ঘরে যাওয়ার কথা বলে কাজে চলে যাই। পরে শুনি, সে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
শাশুড়ি রফেজা খাতুন জানান, একটু দূরে চাচা শ্বশুরের বাড়ি থেকে দুধ এনে বাড়ির মেইন গেট বন্ধ দেখতে পান। পরে অন্য জনের বাড়ির ওপর দিয়ে নিজের বাড়িতে গিয়ে দেখেন- ভেতর থেকে ঘরের দরজা আটকানো। ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে জানালার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়ে বউ ও নাতিকে ফ্যানের সঙ্গে ফাঁসি দিয়ে ঝুলে থাকতে দেখেন। তা দেখে কান্নাকাটি করে প্রতিবেশীদের ডাকেন।
এ ব্যাপারে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টায় স্থানীয় কমিশনারের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল স্বামীর বাড়ি থেকে ঘরেরর দরজা ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে একই রশিতে ঝুলে থাকা মা ও সন্তানের লাশ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ দুটি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে পারিবারিক কলহের কারণেই এই আত্মহত্মার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িকে থানায় আনা হয়েছে।

বুড়িচংয়ে বসতঘরে মা-মেয়ের লাশ:
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের গোবিনাথপুর গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসীর স্ত্রী ও ৪ বছরের কন্যা শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে বুড়িচং থানা পুলিশ। (৮ জুন ২০২৩)বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের মাঝি বাড়িতে নিজ ঘর থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বুড়িচং থানার ওসি (তদন্ত)পরিদর্শক কবির হোসেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু তাহের ও ইউপি আবদুল হক জানান, গোপীনাথপুর গ্রামের মাঝি বাড়ীর শাহ জাহানের ছেলে সিঙ্গাপুর প্রবাসী আবুল কালামের সাথে ৫ বছর পূর্বে একই উপজেলার বারেশ্বর গ্রামের মোঃ মোস্তাফারে ্ময়ে জান্নাত আক্তারের(২৪) বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম নেয়। সম্প্রতি গত ৫ মাস পূর্বে আবুল কালাম ছুটি শেষ করে সিঙ্গাপুর চলে যায়।

বিগত পাঁচ বছর পূর্বে বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়ন এর গোবিনাথ পুর গ্রামের শাহজাহানের ছেলে সিঙ্গাপুর রবাসী আবুল কালামের সাথে পারিবারিক ভাবে একই উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন এর বারেশ্বর গ্রামের বাবুর বাড়ির মো: মোস্তফার মেয়ে জান্নাতুল এর বিয়ে হয়।
পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে ওই ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু তাহের ও সদস্য আরো বলেন, বুধবার রাতে পরিবারের সদস্যদের সাথে খাবার খেয়ে জান্নাত আক্তার শিশু সন্তানকে নিয়ে নিজের রুমে ঘুমাতে যায়। প্রতিদিনের মতো সকালে ঘুম থেকে না উঠায় শ্বাশুড়ি ঘরের দরজায় ডাকতে থাকে। দীর্ঘক্ষণ কোন সারাশব্দ না পেয়ে বাড়ীর লোকজনকে ডেকে আনে। শ্বশুড় শাহজাহান বলেন যে নাতনি ও ছেলের সকাল ১০ টা পর্যন্ত ঘুম থেকে না উঠায় তিনি বহু চেষ্টা করে। এর পর তিনি ভেতর থেকে ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে দেখেন ছেলে স্ত্রী তীরের সঙ্গে গলায় উড়না পেছিয়ে ঝুলে আছে এবং নাতনি হাজেরা আক্তার (৪) এর গলায় বিদ্যুৎ এর তার পেছানো অবস্থায় মৃত দেহ খাটের উপর পড়ে আছে। এর শ্বশুড় শাহজাহান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু তাহের ও সদস্য আব্দুল হক কে খবর দেয়া হয়। পরে চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু তাহের বুড়িচং থানা পুলিশ কে খবর দেয়।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) কবির হোসেন জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে সকাল ১০ টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পুলিশ আসার পর দেখতে পায় ঘরের বিছানায় শিশু হাজেরার মরদেহ পড়ে আছে এবং ঘরের তীরের সঙ্গে সাথে ওড়না নিয়ে ঝুলন্ত শিশুটির মা গৃহ বধূ জান্নাত (২৪)। এছাড়া তিনি আরও বলেন রাতে প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে এবং ব্যবহৃত মোবাইল ভেঙে ফেলে। আমরা মোবাইল জব্দ করেছি। এ বিষয়ে রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, শিশুটির গলায় তার প্যাচানো ছিলো। মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারি স্বামীর সাথে মোবাইল ফোনে ঝগড়া করে শিশু সন্তানকে হত্যার পর মা আত্মহত্যা করেছে। তবে স্থানীয়দের সূত্রমতে আরো জানা যায়,পরিবারের কোলাহল জেরে এ ঘটনাটি করেছে।এর আগে শশুড়-শাশুড়ির সাথেও প্রবাসীর স্ত্রীর ঝগড়া হয়েছে।মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যজনক।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, দুটি মরদেহ উদ্ধার সুরতহাল রির্পোট তৈরি করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বুড়িচং থানায় একটি হত্যা ও একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয় করা যাবে।
খবর পেয়ে কুমিল্লা সদর সার্কেল ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরান হোসেন ঘটনাস্থলে যান এবং বলেন পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে।শিশুটি হাজেরার গলায় তার পেছিয়ে হত্যা করা হয়েছে আর শিশুর মা জান্নাতুলের লাশ তীরের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় কোন রহস্য আছে কি না পুলিশ তা তদন্ত চালিয়ে

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো । বিডিসারাদিন২৪'এ প্রকাশিত নারীকন্ঠ,মতামত লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত বিডিসারাদিন২৪ 'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় বিডিসারাদিন২৪ কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। বিডিসারাদিন২৪ 'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।