সাকিবের শেষ কোথায়?
‘বেটউইনার নিউজ’ এর সাথে সাকিব চুক্তি বাতিল করেছে। এটা মোটামুটি সবার জানা। কিন্তু প্রশ্ন হল আরেক জায়গায়। ধরেন, আপনি যখন একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যান্ড এম্বাসেডর হবেন, তখন অবশ্যই ওই প্রতিষ্ঠানের বিষয় সম্পর্কে অবগত থাকবেন। জানবেন। চিনবেন। না জেনেই কি ওই প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হবেন?
অবশ্যই না। সাকিব হয়তো এই বিষয়টা জানত। সে হয়তো লুকিয়েছে। যদি নাই জানত, তাহলে জানার পরপরই বোর্ডকে এটা বলতে পারতো। যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এটা নিয়ে হুশিয়ারি দিয়েছে, তখন সে বলেছে। তার আগে বলেনি। শুরু থেকে বিসিবি বেটিং,জুয়া এবং ম্যাচফিক্সিং এগুলো বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে আসচ্ছে। মাঝখানে তার ইস্যুতে ক্রিকেটাপাড়ায় গরম ছড়িয়েছে। বিসিবি যখন একটা সিধান্তে উপনীত হবে ঠিক তখনই জল ঘোলা করে মৌখিকভাবে জানিয়ে দিলেন ওই নিউজ পোর্টালের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছেন সাকিব। একটু পর জানা গেলো সাকিবের চিঠি বিসিবি পেয়েছে। তার আগে বোর্ড সভাপতি যখন গণমাধ্যমে বললেন,’দেশ আগে না বেটিং সাইট আগে। কোনটা বেছে নিবে সাকিব। এটা ওর সিধান্ত।’
তখন চুপ সাকিব। চূড়ান্তভাবে এই ঘোষণার আগে সাকিব সুন্দর করেই বলতে পারত। তার অফিসিয়াল পেইজ থেকে বেটউইনারে পোস্টটি সরাতে পারতেন। ছোট্ট একটা ঘোষণা দিতে পারতেন। কিন্তু না। তিনি সেটা করলেন না। জল ঘোলা করলেন। এশিয়া কাপের আগে দল ঘোষণা হবে তখন তিনি চুক্তি বাতিল করেছেন। এমনটা জানিয়ে দিলেন। তিনি ভালো করেই জানতেন, বোর্ড আমার নির্ভরশীল। আর আমরা ১৬ কোটি ক্রিকেটে প্রেমী বোর্ডের উপর। দারুণ একটা নাটক করলেন সাকিব। আর সেই নাটকের শেষটা করলেন তার স্ত্রী আমাদের শিশির ভাবী। এত্তো সুন্দর ফেজবুকে একটা ইমুজি জুড়িয়ে দিলেন। তিনি বুঝিয়ে দিলেন আমরাই পারি…!!!
বছর জুড়ে বিভিন্ন সিরিজের আগে সাকিবের নাটক থাকবেই। এটা এখন মোটামোটামুটি সবার জানা। সে হয়তো টেস্ট খেলবে না, নয়তো ওয়ানডে অথবা টি-টোয়েন্টি। দলের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিনি পরিবারকে সময় দিবেন। পাড়ি দিবেন আমেরিকায়। মাঝ খানে যাওয়া পথে পন্যের বিজ্ঞাপণ করবেন। দারুণ না! বিষয়টা। মোট কথায় টাকা আগে, দেশ আগে না। আবার বোর্ড সভাপতিও এগুলোতে কিছু বলে না। কারণ সে যে নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার, দেশের প্রাণ সাকিব আল হাসান।
এর আগেও বিভিন্ন কর্মকান্ডে সাকিব নিষিদ্ধ হয়েছেন। স্টেডিয়ামেডেসিংরুমে অন্যরম ইশরায়, জুয়ার প্রস্তাব পেয়ে গোপন করায় আরও কত কি? কত অপরাধ করেও হালকা শাস্তি পেয়ে পার পেয়ে গেছেন সাকিব। কিন্তু সাকিব ভালো হলো না।
বাংলায় একটা ভাইরাল গান আছে, ‘মাইয়ারে রে মাইয়া তুই অপরাধী রে, আমার যত্নে গড়া ভালোবাসা দে ফিরাইয়া দেন, আমার অনুভূর্তি সাথে খেলার অধিকার দিলো কে, মাইয়ারে রে মাইয়া তুই অপরাধীরে’
ঠিক তেমনি, সাকিব নানা সময়ে আমাদের অনুভূর্তি সাথে খেলেন। সিরিজে থাকেন না। হেরে আমরা বাসায় ফিরি। এই হলো মূল ঘটনা। সাকিব নানা সময়ে অপরাধ করেন। আর বোর্ড সেটা ক্ষমা করে সুযোগ দেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো সাকিব কি আর ভালো হবে না!