ঢাকা ১১:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা আজ ডিসির দায়িত্বে শেখ হাসিনা চাইলে বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারেন হাসিনাকে যেভাবে ভারত থেকে ফেরত আনা সম্ভব জ্বালানির অভাব, সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটলে তাৎক্ষণিক বিকল্প নেই বিপিডিবির ভারতের সঙ্গে চলমান কোনো প্রকল্প স্থগিত হয়নি:অর্থ উপদেষ্টা এত বিদ্যুৎকেন্দ্র, তবু কেন লোডশেডিং পোশাক কারখানার শ্রমিক অসন্তোষের নেপথ্যে কী ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পোশাক শিল্পের ভবিষ্যৎ টাকা পাচারের স্বর্গ বাংলাদেশ রাজাকার খুঁজে বার করার ভার পেলেন তাঁদেরই আইনজীবী পুলিশ সংস্কারে শিগগিরই প্রাথমিক কমিটি গঠন : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শেখ হাসিনার বিচার সরাসরি সম্প্রচার করা হবে মেট্রোরেলের ছিদ্দিকের চুক্তি বাতিল, চলতি দায়িত্বে রউফ বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় ১৭ স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটরের নিয়োগ বাতিল রোহিঙ্গাদের তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনে জোর প্রধান উপদেষ্টার সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রবাসী আয়ে রেকর্ড! গণঅভ্যুত্থানে নিহত ৬৩১, আহত ১৯২০০ শাহজালাল বিমানবন্দরে পরিবর্তনের হাওয়া ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি: অর্থ উপদেষ্টা নিম্ন আদালতের ১৬৮ বিচারককে একযোগে বদলি

‘আগামী নির্বাচন দিনেই হবে, রাতে নয়’

প্রভাষ আমিন , হেড অব নিউজ, এটিএননিউজ
  • আপডেট সময় : ১০:১১:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ মে ২০২২
  • / ৫০০৫ বার পড়া হয়েছে
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বর্তমান সরকার টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আছে। ২০০৮ সালে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তারপর ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত দুটি নির্বাচনেও জয় পায় আওয়ামী লীগ। তবে পরের দুটি নির্বাচন ২০০৮ সালের নির্বাচনের মতো অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য ছিল না।

২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশই নেয়নি। ভোটারবিহীন তো বটেই, ২০১৪ সালের নির্বাচনে সংকট ছিল প্রার্থীরও। ভোটগ্রহণের আগেই আসলে ক্ষমতায় চলে গিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কারণ ১৫৪ আসনে তারা জয় পেয়েছিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। বিএনপি আসেনি বলে, আওয়ামী লীগের খুব কিছু করারও ছিল না। বিএনপি পেট্রলবোমা আর সন্ত্রাসে নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা করলেও পারেনি। নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপি ভুল করেছে, সেবার এমন প্রচারণা ছিল ব্যাপক।

 আগামী নির্বাচন কোন সরকারের অধীনে হবে, কারা অংশ নেবে, কারা জিতবে; জানি না। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যদি দিনের ভোট দিনে করতে পারেন এবং মানুষ যদি নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, তাহলেই আমরা খুশি। এটুকুই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। আশা করি, হাবিবুল আউয়াল কমিশন তাদের দায়িত্বটুকু নিরপেক্ষতা, সততা ও দৃঢ়তার সাথে পালন করবেন।

সেই ভুল শোধরাতে তারা ২০১৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করে নির্বাচনে অংশ নেয়। কিন্তু নির্বাচনে অংশ নিলেও বিএনপি জিততে চায়, এমনটি মনে হয়নি কখনোই। প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে ব্যাপক বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। তাদের প্রস্তুতিতেও জেতার আকাঙক্ষা পরিস্ফুট হয়নি। মনে হয়েছে, নির্বাচনকে বিতর্কিত করাই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল। সে লক্ষ্য পূরণ হয়েছে দারুণভাবে।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, পুলিশ আর প্রশাসনের অতি উৎসাহ বিএনপি যতটা চেয়েছিল, নির্বাচনকে তারচেয়েও বেশি বিতর্কিত করে তোলে। ধরে আনতে বললে বেঁধে আনার মতো ঘটনা ঘটেছিল সে নির্বাচনে। জেতার জন্য যতটা দরকার, ২০১৮ সালের নির্বাচনে অনিয়ম হয়েছে তারচেয়ে অনেক বেশি। বাংলাদেশে খারাপ নির্বাচনের তালিকা করলে ২০১৮ সালের নির্বাচন থাকবে ওপরের দিকেই। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার কৌশলে দারুণ সফল হয় বিএনপি।

নিজেদের ভরাডুবি ঘটলেও নির্বাচনটি প্রশ্নবিদ্ধ করা গেছে এটিই তাদের সাফল্য। সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ না থাকলেও ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের আগের রাতেই ভোট হয়ে গেছে, এমন ধারণা ব্যাপক প্রচার পায়। ধারণা কখনো কখনো সত্যের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তবে ‘নিশিরাতে ভোট হয়েছে’ এ ধারণা প্রচার করতে পারলেও বিএনপি এর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো প্রতিরোধ গড়তে পারেনি।

আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে দেখেছি, না মাঠে, না ট্রাইব্যুনালে, না উচ্চ আদালতে; নির্বাচন নিয়ে কোথাও কোনো শক্ত প্রতিরোধের চেষ্টাও তাদের মধ্যে দেখা যায়নি। প্রথমে শপথ নেবো না বললেও শেষ মুহূর্তে সংসদে যোগ দিয়ে বিএনপি বরং সে নির্বাচনকে একধরনের বৈধতাই দিয়েছিল। ‘আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়’ এ ধারণা প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেই বিএনপি সন্তুষ্ট ছিল। এখন সেই সন্তুষ্টি কাজে লাগিয়েই বিএনপি আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপি এখন তাদের মূল দাবিতে ফিরে গেছে- নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

‘আগামী নির্বাচন দিনেই হবে, রাতে নয়’

আপডেট সময় : ১০:১১:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ মে ২০২২
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বর্তমান সরকার টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আছে। ২০০৮ সালে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তারপর ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত দুটি নির্বাচনেও জয় পায় আওয়ামী লীগ। তবে পরের দুটি নির্বাচন ২০০৮ সালের নির্বাচনের মতো অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য ছিল না।

২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশই নেয়নি। ভোটারবিহীন তো বটেই, ২০১৪ সালের নির্বাচনে সংকট ছিল প্রার্থীরও। ভোটগ্রহণের আগেই আসলে ক্ষমতায় চলে গিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কারণ ১৫৪ আসনে তারা জয় পেয়েছিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। বিএনপি আসেনি বলে, আওয়ামী লীগের খুব কিছু করারও ছিল না। বিএনপি পেট্রলবোমা আর সন্ত্রাসে নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা করলেও পারেনি। নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপি ভুল করেছে, সেবার এমন প্রচারণা ছিল ব্যাপক।

 আগামী নির্বাচন কোন সরকারের অধীনে হবে, কারা অংশ নেবে, কারা জিতবে; জানি না। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যদি দিনের ভোট দিনে করতে পারেন এবং মানুষ যদি নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, তাহলেই আমরা খুশি। এটুকুই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। আশা করি, হাবিবুল আউয়াল কমিশন তাদের দায়িত্বটুকু নিরপেক্ষতা, সততা ও দৃঢ়তার সাথে পালন করবেন।

সেই ভুল শোধরাতে তারা ২০১৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করে নির্বাচনে অংশ নেয়। কিন্তু নির্বাচনে অংশ নিলেও বিএনপি জিততে চায়, এমনটি মনে হয়নি কখনোই। প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে ব্যাপক বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। তাদের প্রস্তুতিতেও জেতার আকাঙক্ষা পরিস্ফুট হয়নি। মনে হয়েছে, নির্বাচনকে বিতর্কিত করাই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল। সে লক্ষ্য পূরণ হয়েছে দারুণভাবে।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, পুলিশ আর প্রশাসনের অতি উৎসাহ বিএনপি যতটা চেয়েছিল, নির্বাচনকে তারচেয়েও বেশি বিতর্কিত করে তোলে। ধরে আনতে বললে বেঁধে আনার মতো ঘটনা ঘটেছিল সে নির্বাচনে। জেতার জন্য যতটা দরকার, ২০১৮ সালের নির্বাচনে অনিয়ম হয়েছে তারচেয়ে অনেক বেশি। বাংলাদেশে খারাপ নির্বাচনের তালিকা করলে ২০১৮ সালের নির্বাচন থাকবে ওপরের দিকেই। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার কৌশলে দারুণ সফল হয় বিএনপি।

নিজেদের ভরাডুবি ঘটলেও নির্বাচনটি প্রশ্নবিদ্ধ করা গেছে এটিই তাদের সাফল্য। সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ না থাকলেও ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের আগের রাতেই ভোট হয়ে গেছে, এমন ধারণা ব্যাপক প্রচার পায়। ধারণা কখনো কখনো সত্যের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তবে ‘নিশিরাতে ভোট হয়েছে’ এ ধারণা প্রচার করতে পারলেও বিএনপি এর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো প্রতিরোধ গড়তে পারেনি।

আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে দেখেছি, না মাঠে, না ট্রাইব্যুনালে, না উচ্চ আদালতে; নির্বাচন নিয়ে কোথাও কোনো শক্ত প্রতিরোধের চেষ্টাও তাদের মধ্যে দেখা যায়নি। প্রথমে শপথ নেবো না বললেও শেষ মুহূর্তে সংসদে যোগ দিয়ে বিএনপি বরং সে নির্বাচনকে একধরনের বৈধতাই দিয়েছিল। ‘আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়’ এ ধারণা প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেই বিএনপি সন্তুষ্ট ছিল। এখন সেই সন্তুষ্টি কাজে লাগিয়েই বিএনপি আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপি এখন তাদের মূল দাবিতে ফিরে গেছে- নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়।