‘আগামী নির্বাচন দিনেই হবে, রাতে নয়’
- আপডেট সময় : ১০:১১:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ মে ২০২২
- / ৫০০৫ বার পড়া হয়েছে
২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশই নেয়নি। ভোটারবিহীন তো বটেই, ২০১৪ সালের নির্বাচনে সংকট ছিল প্রার্থীরও। ভোটগ্রহণের আগেই আসলে ক্ষমতায় চলে গিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কারণ ১৫৪ আসনে তারা জয় পেয়েছিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। বিএনপি আসেনি বলে, আওয়ামী লীগের খুব কিছু করারও ছিল না। বিএনপি পেট্রলবোমা আর সন্ত্রাসে নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা করলেও পারেনি। নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপি ভুল করেছে, সেবার এমন প্রচারণা ছিল ব্যাপক।
সেই ভুল শোধরাতে তারা ২০১৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করে নির্বাচনে অংশ নেয়। কিন্তু নির্বাচনে অংশ নিলেও বিএনপি জিততে চায়, এমনটি মনে হয়নি কখনোই। প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে ব্যাপক বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। তাদের প্রস্তুতিতেও জেতার আকাঙক্ষা পরিস্ফুট হয়নি। মনে হয়েছে, নির্বাচনকে বিতর্কিত করাই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল। সে লক্ষ্য পূরণ হয়েছে দারুণভাবে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, পুলিশ আর প্রশাসনের অতি উৎসাহ বিএনপি যতটা চেয়েছিল, নির্বাচনকে তারচেয়েও বেশি বিতর্কিত করে তোলে। ধরে আনতে বললে বেঁধে আনার মতো ঘটনা ঘটেছিল সে নির্বাচনে। জেতার জন্য যতটা দরকার, ২০১৮ সালের নির্বাচনে অনিয়ম হয়েছে তারচেয়ে অনেক বেশি। বাংলাদেশে খারাপ নির্বাচনের তালিকা করলে ২০১৮ সালের নির্বাচন থাকবে ওপরের দিকেই। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার কৌশলে দারুণ সফল হয় বিএনপি।
নিজেদের ভরাডুবি ঘটলেও নির্বাচনটি প্রশ্নবিদ্ধ করা গেছে এটিই তাদের সাফল্য। সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ না থাকলেও ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের আগের রাতেই ভোট হয়ে গেছে, এমন ধারণা ব্যাপক প্রচার পায়। ধারণা কখনো কখনো সত্যের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তবে ‘নিশিরাতে ভোট হয়েছে’ এ ধারণা প্রচার করতে পারলেও বিএনপি এর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো প্রতিরোধ গড়তে পারেনি।
আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে দেখেছি, না মাঠে, না ট্রাইব্যুনালে, না উচ্চ আদালতে; নির্বাচন নিয়ে কোথাও কোনো শক্ত প্রতিরোধের চেষ্টাও তাদের মধ্যে দেখা যায়নি। প্রথমে শপথ নেবো না বললেও শেষ মুহূর্তে সংসদে যোগ দিয়ে বিএনপি বরং সে নির্বাচনকে একধরনের বৈধতাই দিয়েছিল। ‘আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়’ এ ধারণা প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেই বিএনপি সন্তুষ্ট ছিল। এখন সেই সন্তুষ্টি কাজে লাগিয়েই বিএনপি আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপি এখন তাদের মূল দাবিতে ফিরে গেছে- নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়।